মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮

গণিতের শর্টকাট যাদু

1) সিরিজ

১২, ১৬, ২০, ২৪, ২৮, ৩২, ৩৬, ………….., ৯৬ সংখ্যাগুলোর সমষ্টি এবং গড় কত?
প্রশ্নটি খেয়াল করলে বুঝতে পারবে সিরিজটির প্রত্যেকটি সংখ্যার পার্থক্য সমান। সাধারণভাবে এই সিরিজটার সমষ্টি এবং গড় বের করা অনেক সময়ের ব্যাপার। এ ধরনের কোন সিরিজের সংখ্যাগুলোর পার্থক্য সমান হলে খুব সহজেই সমাধান করা যায়।
গড়- (১ম সংখ্যা+ শেষের সংখ্যা) /২
সমষ্টি- গড় × মোট সংখ্যা
এখানে গড়= (১২+৯৬)/২= ৫৪
সমষ্টি বের করার জন্য আগে আমাদের মোট সংখ্যা বের করতে হবে। সংখ্যাগুলোর পার্থক্য ৪, তাই মোট সংখ্যা হবে (৯৬/৪)-২= ২২, এখানে ২ বিয়োগ দেয়ার কারণ হলো ৪ এবং ৮ সংখ্যা দুইটা সিরিজে নেই।
সুতরাং সমষ্টি= (৫৪×১২) = ৬৪৮

2) ১ থেকে ১০০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যা

মৌলিক সংখ্যা হলো যেই সংখ্যাকে ১ এবং ঐ সংখ্যা ছাড়া অন্য কোন সংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায় না এবং যার দু’টি অনন্য উৎপাদক রয়েছে। ‘৪৪২২৩২২৩২১’ এই সিকুয়েন্সটা মনে রেখো। প্রথম ৪ এর মানে হলো ১-১০ এর মধ্যে ৪টি মৌলিক সংখ্যা আছে। এভাবে ১১-২০ এর মধ্যে ৪টি, ২১-৩০ এর মধ্যে ২টি, ৩১-৪০ এর মধ্যে ২টি এভাবে ১০০ পর্যন্ত মোট ২৫টি মৌলিক সংখ্যা আছে।
আবার,
১-৫০ এ মোট ১৫টি
৫১-১০০ এ মোট ১০টি
৯০-১০০ এ মাত্র ১টি (৯৭)
একমাত্র জোড় মৌলিক সংখ্যা ২

3) ৩০ থেকে ৭০ পর্যন্ত যেকোন সংখ্যার বর্গ নির্ণয় :

যেই সংখ্যাটির বর্গ নির্ণয় করবে সেটি যদি ৫০ এর বেশি হয় তাহলে যত বেশি হবে সেটা ২৫ এর সাথে যোগ করতে হবে, আর যদি কম হয় তাহলে যত কম হবে সেটা ২৫ থেকে বাদ দিতে হবে। ২৫ এর সাথে যোগ করে বা বাদ দিয়ে যেটা পাবে সেটা প্রথমে বসবে। আর ৫০ এর সাথে ঐ সংখ্যার পার্থক্যের বর্গ শেষে বসবে। ব্যস, হয়ে গেল।
একটু খেয়াল করো,
৩০, ৩১ সংখ্যাগুলোর বর্গ ৩ অংকের।
৩২-৭০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর বর্গ ৪ অংকের।
যদি এই নিয়মে করলে পার্থক্যের বর্গ ৩ অংকের হয় তাহলে বর্গের প্রথম অংকটা তার বামের অংকের সাথে যোগ হয়ে যাবে। আবার পার্থ্যক্যের বর্গ যদি ১০ থেকে ছোট হয় তবে আগে একটা শূন্য বসাতে হবে, অর্থাৎ ০১, ০২, ০৩, ০৪.. এভাবে লিখতে হবে। যেমন-
৫৫ এর বর্গ নির্ণয় করবে। তাহলে ৫৫, ৫০ থেকে ৫ বড়। তাই ৫ কে ২৫ এর সাথে যোগ করে মোট ৩০ কে প্রথমে বসিয়ে দিলাম। আবার পার্থক্য ‘৫’ এর বর্গ ‘২৫’কে শেষে বসিয়ে দিলাম ।
সুতরাং ৫৫ এর বর্গ ৩০৫৫।

যদি ৬২ এর বর্গ নির্ণয় করতে হয়,

৬২ কিন্তু ৫০ থেকে ১২ বেশি, তাই ১২ কে ২৫ এর সাথে যোগ করে ৩৭ কে প্রথমে বসিয়ে দিলাম। আর পার্থক্যে ১২ এর বর্গ হবে ১৪৪। এখানে পার্থক্যের বর্গ ৩ অংকের, তাই বর্গের প্রথম অংককে (১) তার বামের (৭) অংকের সাথে যোগ করে ৮ পেলাম। সুতরাং ৬২ এর বর্গ ৩৮৪৪।

৫৩ এর বর্গ নির্ণয় করতে হলে,

২৫+৩ = ২৮ (প্রথম দুই অংক)। ৩ এর বর্গ ৯ এর জায়গায় ০৯ বসাতে হবে (শেষের দুই অংক)।
সুতরাং ৫৩ এর বর্গ ২৮০৯।
এবার ৫০ থেকে ছোট সংখ্যার একটি উদাহরণ দেই।
৪৩ এর বর্গ নির্ণয় করি-
৪৩, ৫০ থেকে ৭ ছোট তাই ৭ কে ২৫ থেকে বাদ দিয়ে ১৮ কে প্রথমে বসিয়ে দিলাম। আবার পার্থক্য ৭ এর বর্গ করে ৪৯ কে শেষে বসিয়ে দিলাম। সুতরাং ৪৩ এর বর্গ ১৮৪৯।

4) ২০ থেকে ২৯ এর বর্গ নির্ণয়

যেই সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করবে তার এককের ঘরের অংককে ঐ সংখ্যার সাথে যোগ করে ২ দিয়ে গুণ দিবে। আর এককের ঘরের বর্গকে শেষে বসিয়ে দিবে।
যেমন- ২৩ এর বর্গ নির্ণয় করবে। ২৩ এর সাথে এককের ঘরের অংক ৩ কে যোগ করে পাই ২৬। আবার ২৬ কে ২ দিয়ে গুণ করে পাই ৫২। অবশেষে, এককের ঘরের অংক ৩ এর বর্গ ৯ কে শেষে বসিয়ে দিয়ে পাই ৫২৯।
সুতরাং ২৩ এর বর্গ ৫২৯।
ধরো, ২৬ এর বর্গ নির্ণয় করবে-
২৬ এর সাথে এককের ঘরের অংক ৬ যোগ করে পাই ৩২। এবার ৩২ কে ২ দিয়ে গুণ করলে হয় ৬৪। সবশেষে, এককের ঘরের অংক ৬ এর বর্গ ৩৬ কে শেষে বসিয়ে দিই।
খেয়াল করো, ২০-২৯ এর বর্গ তিন অংকের। যদি এককের ঘরের বর্গ ২ অংকের হয় তাহলে প্রথমের অংকটা বামের অংকের সাথে যোগ হয়ে যাবে। তাই এখানে ৩৬ এর ৬ রেখে ৩ কে ৪ এর সাথে যোগ করে পাই (৪+৩) = ৭।  
সুতরাং, ২৬ এর বর্গ ৬৭৬।

5) দুই অংকের কোন সংখ্যার শেষে ৫ থাকলে তার বর্গ নির্ণয়:

ব্যাপারটা খুবই সহজ। লক্ষ্য করো –
১. প্রথম অংকের সাথে ১ যোগ করো।
২. তারপর সেটাকে প্রথম অংকের সাথে গুণ করো।
৩. শেষে ‘২৫’ বসিয়ে দাও।
এইতো হয়ে গেল। একটা উদাহরণ দেই, ধরো ৪৫ এর বর্গ বের করবে। এখানে, প্রথম অংক ৪, তার সাথে ১ যোগ করলে হয় ৫। এবার প্রথম অংক ৪ এর সাথে ৫ গুণ করলে হয় ২০, এবার সবশেষে ২৫ বসাও। তাহলে উত্তর হবে ২০২৫।

6) ১১ দিয়ে যেকোন দুই অংকের সংখ্যাকে গুণ :

যেই সংখ্যাকে গুণ করবে সেই সংখ্যার দুই অংকের মধ্যখানে সংখ্যাটার অংকদ্বয়ের যোগফলটা বসিয়ে দিলেই পেয়ে যাবে উত্তর।
যেমন- ২৭×১১ =কত?
অংকদ্বয়ের যোগফল (২+৭)= ৯। এবার ‘৯’ কে অংকদ্বয়ের মাঝে বসিয়ে দাও,
২৯৭, এইতো হয়ে গেল!
তবে একটা ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে যে, অংকদ্বয়ের যোগফল যদি ১০ বা এর থেকে বড় হয় তাহলে যোগফলের শেষের অংকটা রেখে প্রথম অংকটা বামের অংকের সাথে যোগ করে দিবে।
যেমন- ৫৯×১১= কত?
অংকদ্বয়ের যোগফল (৯+৫)= ১৪। ৪ কে রেখে দিয়ে ১ কে ৫ এর সাথে যোগ করবো। তাহলে, উত্তর হবে ৬৪৯।
এভাবে ১১ দিয়ে যেকোন ২ অংকের সংখ্যাকে খুব সহজেই গুণ করে ফেলতে পারো।

7) ‘পাই’ এর মান

‘পাই’ এর মান হলো- ৩.১৪১৫৯২৬
এটা অনেক বড় তাই মনে রাখতে অসুবিধা হয়ে যায় কিংবা ভুলে যাই। এটাকে খুব সহজে সবসময় মনে রাখার জন্য একটা কৌশল আছে। এই বাক্যটি মনে রাখো।
May I have a large Container of Coffee?
May (3) I (1) have (4) a (1) large (5) Container (9) of (2) Coffee (6)?
বাক্যটির প্রতিটা শব্দের বর্ণগুলোর সংখ্যা বসালেই পাই এর মান পেয়ে যাবে। ৩ এর পর দশমিক দিতে ভুলবে না।

8) যেকোন সংখ্যাকে ৫ দ্বারা গুণ

যেই সংখ্যাটিকে গুণ করবে সেটাকে ২ দিয়ে ভাগ করে (অর্ধেক করে) ১০ দ্বারা গুণ করবে।
যেমন-
৭৮×৫= কত?
(৭৮/২)×১০ = ৩৯×১০ = ৩৯০।
আরেকটি উদাহরণ দিই,
৩৫×৫ = কত?
(৩৫/২)×১০ = ১৭.৫×১০ = ১৭৫

9) কোন সংখ্যাকে ২৫ দিয়ে গুণ

এটা মোটামুটি ৫ দিয়ে গুণ করার মতই। যেই সংখ্যাটিকে গুণ করবে সেটাকে ৪ দ্বারা ভাগ করে ১০০ দিয়ে গুণ দিবে। যেমন-
৪৪×২৫= কত?
৪৪/৪= ১১,  
১১×১০০ = ১১০০